নতুন চোখ উঠলে করণীয় কি?

হঠাৎ নতুন চোখ উঠলে লক্ষ্য করা যায় চোখ লাল হয়ে আছে। কিছুটা ফুলেছে অস্থীরভাব হচ্ছে। এমন কি চোখে কম দেখা যাচ্ছে। এরকম লক্ষণকে সাধারণত আমরা চোখ উঠা বলি।

চোখ উঠা রোগটি বাচ্চাদের সহ বড়দেরও হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞান ভাষায় এটাকে কনজাংটিভাইটিস অথবা চোখের আবরণ বলা হয়।

নতুন-চোখ-উঠলে-করণীয়-কি?


বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এই রোগের প্রাদুরভার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সঠিকভাবে জানা যায় গরম এবং বর্ষায় এই রোগ বৃদ্ধি পায়। চোখ উঠা রোগটি বেশ ছোয়াছে। ছোয়াছে হওয়ার ফলে এই রোগ অন্যদের মধ্যে প্রবেশ করে। এটি সাধারণ ব্যকটেরিয়া যুক্ত বর্তমানে যেটি হচ্ছে সেটি সিজনাল ফ্লু। 



নতুন-চোখ-উঠলে-করণীয়-কি?


মানুষের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর সেইসব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে চোখ হচ্ছে বড় অংশ। চোখ উঠলে চিন্তার শেষ নেই। কারণ সারা জীবনে চোখ উঠেনি এমন ব্যক্তি খুজে পাওয়া অসম্ভব। একবার চোখ ওঠলে ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তাছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলেও চোখ উঠার সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে চোখ উঠা শুরু হলে চোখের যত্ন নেয়া একান্ত প্রয়োজন।

চোখ উঠার লক্ষণ

চোখ উঠলে চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হলে ব্যথা হয়, চোখের পাতা ফুলে যায়, চোখ খচখচ করে, চোখে চুলকানী হতে পারে এবং সাময়িক সময়ের মধ্যে চোখে দিয়ে কম দেখেতে পারে। গোলাপী চোখ অথবা কনজাংটিভাইটি চোখের স্বচ্ছ ঝিল্লির একটি প্রদাহ। স্বচ্ছ ঝিল্লি চোখের পাতার সাদা অংশকে পুরোপুরীভাবে ঢেকে রাখে।


নতুন-চোখ-উঠলে-করণীয়-কি?


চোখ ওঠলে চোখের ভিতর ছোট রক্তনালীগুলো ফুলে যায় ফলে সেগুলে সঠিকভাবে দেখতে পায় না। সে জন্য চোখের সাদা অংশ গোলাপী দেখায়।

এছাড়াও চোখ উঠার আরো লক্ষণ আছে যেমন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এ্যালার্জি, চোখে রাসায়নিক কোন কিছু প্রবেশের কারণে এবং চোখে কোন টুকরো বস্তু ঢুকলে।

চোখ উঠলে করণীয়

এই রোগে চিকিৎসকের পরামর্শ্ব নেয়া একান্ত জরুরী। অবহেলা করলে অনেক সময় রোগটি বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও চোখের কর্ণিয়ার ক্ষতি হতে পারে। রোগটি হওয়া কালিন চোখ ভেজা থাকলে টিস্যু পেপার দিয়ে আলতভাবে মুছে ফেলতে হবে। টিস্যুটি ব্যবহারের পর ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলতে হবে।

আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। চোখ উঠা আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহারকৃত পোষাক সহ তোয়ালে, বালিশ কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। আক্রান্ত স্থান ছোয়ার পর সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন।

বাহিরে গেলে কালো চশমা ব্যবহার করতে পারেন। কালো চশমা ব্যবহারের ফলে আক্রান্ত চোখের উপর রোদের তিব্র আলো বা ময়লা পড়া থেকে মুক্ত থাকবে। 


নতুন-চোখ-উঠলে-করণীয়-কি?

চোখ উঠলে কোন ড্রপ

চোখের মধ্যে থাকা ভাইরাসটিকে ধ্বংস করার জন্য একটি এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। সেই এন্টিবায়োটি ড্রপটি সাত থেকে দশ দিন সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে। তবে এন্টিবায়োটিক ড্রপ যখন দিতে শুরু করবেন অবশ্যই একটানা দিতে হবে কোন ভাবেই গ্যাব দেওয়া যাবে না।
 
চোক উঠা ভাইরাসকে ধ্বংস করার জন্য আপনী যেগুলো এন্টিবায়োকটি ব্যবহার করতে পারেন তা হলো Moxifloxacin eye drops, Ciprofloxacin eye drops, Lumefloxacin eye drops, Besifloxacin eye drops এসব এন্টিবায়োটিক ছাড়াও আরো অনেক এন্টিবায়োক ড্রপ পাওয়া যায়।

তাছাড়াও চোখ ওঠা যদি প্রাথমিক অবস্থায় থাকে তাহলে Chlorpheniramine eye drops ব্যবহার করতে পারেন। যদি বেশি পরিমাণে চোখ ওঠে থাকে এবং অনেক বেশি চুলকায় তাহলে আপনী রাতে খাওয়ার পর Antihistamine ঔষধটি খেতে পারেন।

বাচ্চাদের চোখ উঠলে করণীয়

বাচ্চাদের চোখ উঠলে নিয়মিত ভালোভাবে পরিস্কার রাখুন। চোখ উঠার ফলে ভাইরাস জনিত ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেজন্য বেড়দের চোখের তুলনায় বাচ্চাদের চোখের ড্রপ কিরকম ব্যবহার হতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাদের চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।

চোখ উঠার দোয়া

হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে আমার চোখের অপকারিতা, কানের, জবানের, অন্তরের এবং বীর্জের অপকারিতা থেকে পুরোপুরিভাবে মুক্তি দিন। (মিশকাত, আবু দাউদ-১৫৫১)

চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে

ভিটামিন এ: গবেষকদের মতে চোখ উঠা থেকে যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ভিটামিন এ আছে যে সব খাবে সেব খাবার খাওয়া জরুরী। তাই চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য ভিটামিন এ,বি,সি,ডি, বিটা ক্যারোটিন, এ্যান্টি অক্সিডেন্ট খেতে পারেন যেমন আপেল, টমেটো, পাকা আম, পাকা পেঁপে, রাঙ্গা আলুম মিষ্টি কুমড়া, গাজর ভুট্টা, সবুজ শাক সবজি, পালংশাক, বেতেশাক এবং বাঁধাকপি সহ যেগুলো খাবারে জিংক এর পরিমাণ বেশি রয়েছে।

ভিটামিন বি: চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে ভিটামিন বি অনেক বেশি গুরুত্ব। ভিটামিন বি পাওয়া যায় যে সব খাবারে কলিজা, দুধ, ডিম এবং ছোট মাছে। চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে হলে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখা।

ভিটামিন সি: চোখের ভাইরাস জনিত প্রদাহের আসঙ্কা কমাতে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন কমলা লেবু সহ টক জাতীয় খাবার খাওয়া অনেক বেশি জরুরী। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে রক্ত চলাচলের জন্য বেশ সহযোগিতা পালন করে। 


বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক জানতে ভিজিট করতে পারেন....

Post a Comment

0 Comments