মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। জেনে নিতে পারি মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা বিষয়ক কি কারণে হয় এবং মুক্তির উপায় সমূহ:
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দুর করার উপায়
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা হলে নিজে প্রথমে লক্ষণগুলো বোঝা প্রয়োজন। লক্ষণগুলির মধ্যে অনুভূতিটা কী রকম ও শরীরের উপর কী পরিমাণ খারাপ প্রভাব ফেলছে সে বিষয়গুলো ভালোভাবে বোঝা। কি রকম বিষয় বেশি ভালোলাগেে এবং কি করতে ভালোবাসেন না?
এ রকম ইচ্ছা মতপ্রকাশ গুলি নির্দিধায় কাউকে বলতে পারেন। সে বিষয়গুলো বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে যে কোনভাবে আলাপ আলোচনা করতে পারেন। এতে করে কিছুটা হলেও মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা কমে যাবে।
মানসিক চাপ পরিবর্তন
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সারাদিন আপনার কি রকম মনের অবস্থান হচ্ছে বা পরিবর্তন হয় সে বিষয় গুলো খাতায় অথবা ডায়েরীতে হ্যান্ড রাইটিং করে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে বুঝতে পারবেন সারাদিনে কি রকম ইচ্ছা অনিচ্ছা অথবা চিন্তা করলে মন পুরোপুরী ভালো থাকছে এবং অনিচ্ছাগুলো করলে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে ।
এসব ব্যতিত কোন কিছু বিষয় পরিবর্তন করলেও মন কিছু পরিমাণে ঠিক হতে পারে। সুতরাং এতে মানসিক চাপ ও দুশ্চিতা অনেক কমে যেতে পারে।
মানসিক চাপ মোকাবিলা করবেন যেভাবে
মানসিক চাপ দুর করতে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে সেক্ষেত্রে মন খারাপ হওয়ার মত কোন সংবাদ শুনলে মনোবল অতি তাড়াতাড়ী খারাপ না হয় সে জন্য পরবর্তী কোন কাজে মনোযোগ দেওয়া।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা যাতে না আসে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সব থেকে যে বিষয়ে কাজ করতে ভালোলাগে সে বিষয়ের কাজ গুলো করতে হবে।
মানসিক চাপ কমানোর উপায়
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে থেকে মুক্তি পেতে কারো সঙ্গে ভালোলাগার মত বিষয় সমূহ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এতে করে মনের মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্ত একটু হলে হালকা হয়ে যাবে। তাছাড়া মনের সুখ এবং শিথিলতা হ্রাস পায় ও মানসিক চাপ অসুস্থা থেকে নিরাময় হয় ।
এর কারণে সম্পূর্ণ নিজের মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তকে ভুলে গিয়ে আরও ভালভাবে বুঝতে পারবেন এবং কর্মস্থল সহ যে কোন জায়গায় কাজ করতে এব্ং কাজে মন দিতে স্বচ্ছন্দবোধ হবে। বিভিন্ন লোকজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন এতে অনেক জ্ঞান অর্জন হবে সেক্ষেত্রে নিজের একাকিত্ব বোধ মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে যখন কোন বিষয় নিয়ে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার সৃষ্টি হচ্ছে।
সেক্ষেত্রে সেই সব বিষয়গুলো মনের ভিতর লুকিয়ে না রেখে বাসার সদস্য বা কাজের কোন মানুষের সঙ্গে বিষয়টি খুলে বলতে হবে। এতেকরে দেখা যাবে মনের মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা অনেকটা কমে যাবে। মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা এড়াতে কারো সঙ্গে শেয়ার করুন তাহলে দেখা যাবে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা রোগ থেকে মুক্তি
যখন ক্রমাগত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তায় অসুস্থতা বোধ হচ্ছে এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকা জরুরী। কিছুদিন নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকলে পরিবারের বিভিন্ন কাজগুলি করার কারণেও নিজের আত্মবিশ্বাস ও অগ্রসহ হওয়া বাড়ায়। নিজের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে নিজেকে বিভিন্ন প্রকার কাজের মধ্যে দিয়ে জড়িয়ে রাখতে পারেন।
সেক্ষেত্রে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার বিষয়টি অনুভব মাথায় আসবে না বরং নিজের দুঃখ এবং সুখ একে অন্যের সাথে ভাগ করতে পারবেন। যখন মনে হবে একাকিত্বের মধ্যে আছেন হাতের কাছে মোবাইল ফোন থাকলে ভিডিও কল অথবা চ্যাটিং করে সময় কাটাতে পারেন সেক্ষেত্রে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা আসার কোন সম্ভাবনা নাই। মানসিক ও দুশ্চিন্তা ছাড়তে নিয়মিত ব্যায়াম করতে বাহিরে যাবেন।
সেখানে অনেক ব্যক্তির সাথে ব্যায়ম করতে বিভিন্ন আলাপ আলোচনায় নিজেকে জমাতে পারেন তাছাড়াও মন ভালো রাখার জন্য কবিতা, খেলাধুলা, সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বই পড়তে পারেন । সেক্ষেত্রে দেখা যাবে দিন শেষে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা ক্রমাগত মুক্তি পেতে থাকবে। এতে শরীরের স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে।
ক্রিয়াকলাপে
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা ছুড়ে ফেলতে বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ শুরু করতে পারেন যা মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সেই ক্রিয়াকলাপগুলি নিজেই উদ্বেগ নিতে পারেন নিজেই ক্রিয়াকলাপগুলি ব্যাখা করতে শুরু করুন.....
কাজের প্রতি আগ্রহ
কী রকম বিষয় পছন্দ করেন, কোন কাজে অনেক বেশি আগ্রহী সেই কাজটি করুন নিজের মনের ইচ্ছামত কাজ করলে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তায় কোন প্রকার চাপ সৃষ্টি হয় না বরং মস্তিষ্ক আরাম অনুভব করে।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর হালকা নাস্তা করে বাইরে ব্যায়েম জন্য যাওয়া পছন্দ করেন অথবা নিজের কোন পোষা প্রাণিকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে পছন্দ করেন সে রকম কাজের অভ্যাস করুন।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে
অতিরিক্ত সময় বিভিন্ন রকম কিছু কাজ করার কথা দুশ্চিন্তা করা যাবে না, এর ফলে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা ক্রমাগত বাড়তে পারে, সেক্ষেত্রে নিজের ব্রেইনকে একটিমাত্র কাজে ব্যবহার করতে পারেন। এক পর্যয়ে দেখা যাবে এক একটি করে কাজ সম্পূর্ণ করলে আপনার সবগুলো কাজ হয়ে যাবে। কোন প্রকার মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা ছাড়াই।
প্রাকৃতিক দৃশ্য
অনেক ব্যক্তি আছেন অনেক বছর ধরে শহরে বসবাস করছেন কিন্তু গ্রামের কোন প্রকার খোলা প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পান না এবং বুকভরা বিশুদ্ধ শ্বাস নিতে পারেন না।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুব বিশুদ্ধ বাতাস খোলা আকাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ মুক্ত গ্যাস গ্রহণ করতে পারেন। সেই কারণে গ্রামের লোকজনদের শরীরের অসুস্থ্যতা অনেক কম হয়ে থাকে।
মানসিক চাপ কাটানোর ঘরোয়া উপায়
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার বিষয়টি ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া অনেক বেশি জরুরী। এতে কিছুটা হলেও মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা বিষয়টি সমস্যা সমাধান হতে পারে। ঘুম সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য নিম্নে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
মানসিক চাপ কমানোর ব্যায়াম
প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে । যোগ দিতে পারেন সাঁতার কাটতে। নিজের মনে ভালো লাগা অনুভুতি হয় এমন কিছু উপভোগ করতে পারেন তা প্রতিদিনের তালিকায় যোগ করুন। শারীরিকভাবে দূর্বল অনুভব করলে অবশ্যই ডাক্তারদের সাথে পরামর্শ করুন।
নেশা করলে কি হয়
নেশা সহ মাদক সেবন করা উচিত নয় এতে নিজের ব্রেইন এবং মানসিক চাপ প্রখরভাবে সৃষ্টি হতে পারে, সুতরাং নেশা পান করার কারণে আরও মানসিক চাপ তৈরি হলে শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ প্রতঙ্গ অকেজো হয়ে যেতে পারে। এসব পানিয় যদিও পান করার বদ অভ্যাস থাকলে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
নয়তো নেশা পানের মাধ্যমে মানসিক চাপ থেকে বিভিন্ন প্রকার দুশ্চিন্তার কারণে মৃত্যুও হতে পারে। সুতরাং সচেতন হোন সুস্থ্য জীবন উপভোগ করুন। নিয়মিত ডাক্তারের সঠিক পরামর্শে মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মানসিক চাপ কমানোর খাবার
খাবারের প্রতি বিশেষ করে যত্ন নেওয়া জরুরী। নিয়ম অনুযায়ী খাবার সঠিক সময় নির্ধারণ করুন ও পুষ্টি আছে এ জাতীয় খাবার খান। নিয়মিত ডায়েট কন্ট্রল করতে ভুলবেন না।
এমন কিছু করা যাবে না যাতে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার কারণে নিজের কোন প্রকার ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়। কারণ সুস্থ্যতাই বেঁচে থাকার একমাত্র চাবিকাঠি।
পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
0 Comments
Do not share any link